শ্রীচৈতন্য থেকে রবীন্দ্রনাথ সবাই দল-এর লক্ষ্যবস্তু ছিলেন, এবং সেই দল ছিল চলতি নিয়মের প্রতিভূ। ‘সুরাই মেলের কুল বেটা সর্বনাশের মূল' রামমোহনের উদ্দেশ্যে এই ছড়া, বা 'পায়রা কবি' রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে রক্ষণশীল সাহিত্য সমালোচকদের আক্রমণ এরই বহিঃপ্রকাশ। বাঙ্গালী সব সময়ে কুচক্রী, দলাদলিতে পটু, একথাও যথার্থ নয়। সব দেশে সব সমাজে দল, দলাদলি আছে, থাকবে। কারণ সমাজে এর উপযোগিতা আছে। সতীদাহ, জাতপাত, কুলীনদের বহুবিবাহের অত্যাচারের অবসান ত নতুন দল-এর উদ্ভবেই সম্ভব হয়েছিল ! শ্রীচৈতন্যের মতো পুরুষও ত ‘পাষণ্ড' বলে অভিহিত হয়েছিলেন, কিন্তু নব চিন্তাধারায় মানুষকে জড়ো করে তিনি নিয়ম ভাঙ্গার বাতাবরণ সৃষ্টি করেছিলেন পুরানো দলকে বিপর্যন্ত করে ৷
দল ও দলাদলি অর্থে'ই কূটকচালি, কোন্দল বা দলপতি মাত্রেই স্বেচ্ছায় আপন দলের কাউকে বিনা কারণে ত্যাগ করতে পারেন, এমন নয়। সাধারণতঃ দলাদলি কথাটার মধ্যে বেশ একটা মজা ও ঝগড়াঝাটির ভাব দ্যোতনা করে। এবং বাঙ্গালী সবচেয়ে বেশি দলাদলি করে, চক্র গড়ে, দল ভাঙ্গে এমন অহেতুক ধারণাও জনপ্রিয়। কিন্তু দলাদলির যে একটা ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে, প্রগতি-সংস্কারে দল ও দলাদলি কীভাবে সমাজ প্রবাহে গতির সঞ্চার করেছে, এবিষয়ে আমরা অনবহিত। এই অনালোচিত দিকটির বিশ্লেষণ দিয়েই এই গ্রন্থের সূচনা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, সমাজ আন্দোলন ও রাজনৈতিক স্তরে দল ও দলাদলি সম্পর্কে আলোচনায় এর বিস্তৃতি। পাচটি অধ্যায়ে দলাদলির ঐতিহাসিক পটভূমি, সমাজ সংস্কারে এর অবদান, জীবনের নানা ক্ষেত্রে দলাদলির বিন্যাস ও রূপ তুলে ধরা হয়েছে।
১০৪ পাতা
ফাইল সাইজ: ৫.১ এম.বি
হার্ড কপি, স্ক্যান, এডিট : ডি. এস. আর
:: ডাউনলোড করুন ::
সজল বসুর লেখা এই বইটি নতুন করে প্রকাশিত হয়েছে কিনা জানা যায়নি। "কল্পন" নামের প্রকাশকের কথাও শোনা যায়না। তাই ধরে নিতে হয় বইটি বর্তমানে দুষ্প্রাপ্য। কিন্তু এমন আকর্ষক বিষয়ে বই নতুন করে ছাপার প্রয়োজন আছে। আগ্রহী পাঠকরা কখনো খোঁজ করে দেখতে পারেন প্রকাশক "পুস্তক বিপনী"তে। ওরা এমন নাম না জানা অনেক প্রকাশকের বইয়ের পরিবেশক। আমিও কোনো এক বইমেলায় ওঁদের স্টল থেকেই বইটি পেয়েছিলাম। হার্ডকপি সংগ্রহযোগ্য একথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন