শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৩

ঐতিহাসিক বাণগড়, বাণরাজ্য ও বিরূপাক্ষ শিবমন্দির - সুকুমার সরকার

একটি বিশাল পরিত্যক্ত ভূমি হ'ল বাণগড়। মণি-মুক্তো খচিত এর ইতিহাস । স্বাধীনতার পূর্বে ও খুবই সাম্প্রতিককালে দু'দফায় যে খননকার্য হয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইণ্ডিয়ার উদ্যোগে তাতে প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রস্তর যুগ থেকে তাম্র-প্রস্তর (chalcolethic) যুগ এবং পরবর্তীকালে অনেকগুলো সাম্রাজ্যের সাক্ষী এই বাণগড়। বাণগড় বা দেবীকোট, দেওকোট, উমাবন, ঊষাবন যা ছিল অতি বৃহৎ কোটিবর্ষের অন্তর্গত, বিশ্ব সভ্যতার প্রথম বাণী এখান থেকেই হয়েছিল উচ্চারিত—একথা অনেকেই বলেছেন।

বাণগড় সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বৃহৎ ঐতিহাসিক এবং প্রাগৈতিহাসিক ভূ-খণ্ড। এর সংরক্ষিত (protected) এলাকা হ'ল বারোশত একর।

কুষাণযুগে বাণগড় থেকে পাওয়া টেরাকোটা শিল্প অত্যন্ত উন্নতমানের। টেরাকোটার ফলকগুলিই তার প্রমাণ। অসাধারণ পটচিত্রও এই বাণগড়েরই অনন্য সম্পদ। বাণগড় শুধুমাত্র মাটির একটি ধ্বংসস্তুপ নয়; অনাবিষ্কৃত অলিখিত (un-written registry) সভ্যতার সুবিশাল ইতিহাস। স্থাপত্য, ভাস্কর্য শিল্প, সংস্কৃতি সমন্বিত এক সুবিশাল নগর। জৈন ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে জানা যায় এই নগরে বসতবাড়ির সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার।

রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৩

বঙ্গ মিথিলার বিভূতিভূষণ - মঞ্জুলী ঘোষ

 বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের সাহিত্যিক প্রতিভা ও সাহিত্যচিন্তা বুদ্ধিবাদী মনন-শাণিত বিশ্লেষণী দৃষ্টিকোণ থেকে আজ অবধি স্বল্প আলোচিত। কারণ হিসেবে সর্বাগ্রে নির্দিষ্ট হয় হাস্যরসস্রস্টা রূপে তাঁর দৃঢ় একটানা পরিচিতি। এই পরিচিতিই নাকি তাঁর সাহিত্য প্রতিভার অনুপুঙ্খ আলোচনায় প্রতিবন্ধ এনেছে। অন্য কারণটি বলতে চায়, যথেষ্ট আধুনিক মনস্কতায় এই সাহিত্যিক প্রতিভাখানি উত্তরিত নয়।

এই পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গ মিথিলার বিভূতি-প্রতিভার সম্পূর্ণ আলোচিত কয়েকটি প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখার সংকল্পই এই রচনাগুলি ( বিভিন্ন সময়ে লেখা ) সংকলনের প্রেরণা ।

রাজশেখর বসু বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের রচনা মানবীয় করুণা ধারার ক্ষীর-নিষিক্ত বলে মনে করেছেন। —“ইংরেজিতে একটি কথা আছে, 'milk of human kindness'। - বিভূতিভূষণের লেখনীতে সেই কারণ্যের ক্ষীরধারা প্রচুর পরিমাণে আছে।” লিখেছিলেন তিনি, 'কথা সাহিত্য' বিভতিভূষণ মুখোপাধ্যায় ক্রোড়পত্রে।

এই করুণা ক্ষীরধারাকেই বিভূতিভষণের রচনা সংসারে নিরন্তর বইতে দেখা গেছে। তাঁর প্রসঙ্গে একটি সন্দেহাতীত ভাবে উচ্চারিত কথা এই যে, তিনি ভাবরস সংগ্রহ করেছেন নিতান্ত চেনা পরিচিত দুনিয়া এবং প্রাত্যহিকতাময় জীবন থেকে। আর সেই দানিয়া, সেই জীবনের প্রতি মেলে রয়েছেন যেন এক স্নেহসিক্ত, ক্ষমাস্নিগ্ধ, করুণা সিঞ্চিত দৃষ্টি যা প্রায়ই অমলিন কৌতুক হাসিতে উজ্জ্বল। এই করুণা কোমল সহাস উজ্জ্বলতাই তাঁর প্রতিভার মৌলিক বিশিষ্টতা বলে গৃহীত হয়েছে । তবে কৌতুক উজ্জ্বল করুণা স্নিগ্ধতা তরলতাকে ডেকে আনেনি কোথাও তাঁর রচনা সংসারে; যদিও সেই দুর্যোগসম্ভাবনা ছিল।


শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৩

মাইকেল - শিশিরকুমার দাস

মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি এবং নাট্যকার ও প্রহসন রচয়িতা। তাকে বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব গণ্য করা হয়। ঐতিহ্যের অনুবর্তিতা অমান্য করে নব্যরীতি প্রবর্তনের কারণে তাকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি হিসেবেও অভিহিত করা হয়।

শিশিরকুমার দাস স্বল্প পরিসরে অত্যন্ত সুখপাঠ্য ভাষায় মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনকে তুলে ধরেছেন।


শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩

রবিতীর্থে বিদেশী - প্রবীরকুমার দেবনাথ

গবেষক-লেখক প্রবীরকুমার দেবনাথ বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত চিঠিপত্র ছাড়াও দেশ-বিদেশের দুর্লভ পত্র-পত্রিকা থেকে উপাদান সংগ্রহ করে শান্তিনিকেতনে আগত (১৯০১-১৯৪১) বিদেশীদের প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন এই গ্রন্থে। বলাবাহুল্য, রবীন্দ্রচর্চায় অপরিহার্য এই গ্রন্থ থেকে পাওয়া যাবে রবীন্দ্রজীবনের বহু মূল্যবান নূতন তথ্য।

রবীন্দ্রনাথ বিশ্বপথিক। দেশে দেশে ভ্রমণ করে বহু বিদেশীর সান্নিধ্যে এসে তিনি ‘দূর’কে ‘নিকট’ করেছেন—আহ্বান করেছেন বিশ্বের মানুষকে বিশ্ববিদ্যাতীর্থপ্রাঙ্গণ শান্তিনিকেতন-বিশ্বভারতীতে। স্বভাবতই রবিতীর্থ শান্তিনিকেতনে আগমন ঘটে বহু বিদেশীর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে। জাপানের হোরিসান, কাসাহারা, হাসেগাওয়া, সানোসান, তাকাগাকি, সুশো ব্যোদো, নোগুচি, ইংলন্ডের পিয়ার্সন, এন্ডরুজ, আমেরিকার এলমহার্স্ট, গ্রেচেন গ্রীন, হ্যারি টিম্বার্স, ফ্রান্সের সিলভা লেভি, আঁদ্রে কার্পেলে, চেকোশ্লোভাকিয়ার উইন্টারনিজ্, লেসনী, প্যালেস্টাইনের স্লোমিত্ ফ্লাউম, চীনের তান য়ুন-শান, সু-সী-মো, ইতালির ফর্মিকি, তুচ্চি, জারমেনির আনা জেলিক, হাইনস্ মোদে, সুইডেনের সেডারব্লম, জিয়ানসন, নরওয়ের স্টেন কোনো প্রমুখ শতাধিক বিদেশী রবীন্দ্রনাথের জীবনকালে শান্তিনিকেতনে এসেছিলেন—একাত্ম হয়ে যোগ দিয়েছিলেন এখানকার কর্মধারায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক বা কর্মীরূপে। তাঁরা অনেকেই মনে করতেন 'Santiniketan is almost the world in miniature'!


শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩

বৃহত্তর গড়িয়ার ইতিবৃত্ত - সুধাংশু মুখোপাধ্যায়

এই গ্রন্থে শ্রীমুখোপাধ্যায় গড়িয়ার প্রাচীন ইতিহাস, গড়িয়ার আশেপাশের অঞ্চল, আদিগঙ্গার গতিধারা, বনাঞ্চল আর জলাশয়, বোড়াল গ্রাম, বৈষ্ণবঘাটা, কামডহরি, ব্রহ্মপুর, বারহাঁস-ফরতাবাদ মৌজা ইত্যাদি সম্বন্ধে বিস্তৃত আলোচনা করেন। প্রসঙ্গত তিনি এই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কিত কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির কথাও উল্লেখ করেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন শ্রীচৈতন্যদেব এবং শ্রীঅরবিন্দের দাদু রাজনারায়ণ বসু। তাছাড়া এই অঞ্চলের জনবিন্যাস মানচিত্রে পরিবর্তন, গড়িয়া মেইন রোডের টালির নালার উপরে নির্মিত সেতু, যানবাহনের বিবর্তন, লবণ ও নীলচাষিদের অবস্থা সম্বন্ধেও মূল্যবান তথ্য লেখক সঙ্কলিত করেন। টোল-চতুষ্পাঠী থেকে আরম্ভ করে আধুনিক শিক্ষার প্রবর্তনের সময়কাল ও তার পরবর্তীকালে এই অঞ্চলের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সমাজের ক্ষেত্রে ক্রমশ যে পরিবর্তন ঘটে তারও এক স্বচ্ছ ছবি লেখক এই গ্রন্থে তুলে ধরেন।