রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২

উত্তরপাড়ার রথযাত্রা ও দোলযাত্রার ইতিহাস : কৌশিক পাল চৌধুরী

উত্তরপাড়া হুগলী জেলার অন্যতম প্রাচীন জনপদ। সেই সুপ্রাচীন ভূমিতে উদযাপিত  রথযাত্রা ও দোলযাত্রা উৎসব শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী। অথচ এর কোনও লিখিত ইতিহাস এতকাল ছিল না। এই গ্রন্থের প্রথম অংশে বিবৃত হয়েছে উত্তরপাড়ায় রথযাত্রা প্রচলনের ইতিহাস। দ্বিতীয় অংশে প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা হয়েছে ভদ্রকালী মন্দির, রঘুনাথ জীউ মন্দির ও শ্যামরায়ের দোলযাত্রা উৎসবের সুপ্রাচীন ইতিবৃত্ত। উৎসবাদির বর্ণনা প্রসঙ্গে ঘুরে ফিরে এসেছে এর পৌরাণিক উৎস ও ঐতিহাসিক ঘটনাবলী। এছাড়া দোলের মেলা আর রথের মেলার অনুপম হৃদয়স্পর্শী বর্ণনা গ্রন্থটিতে এক নতুন মাত্রা যােগ  করেছে। একাধিক মূল্যবান স্কেচ, রঙিন আলােকচিত্র ও দুর্লভ মানচিত্রে গ্রন্থটি সুসমৃদ্ধ।


শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২২

ময়মনসিংহ গীতিকার গল্প-নীরদবরণ হাজরা

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তৎকালীন প্রধান দীনেশচন্দ্র সেন। ১৯১২-১৩ সালে তার হাতে পড়ল এক পত্রিকার এক প্রবন্ধ। প্রবন্ধকার মালীর যােগান’ নামের সেই প্রবন্ধে  অনেকগুলি গীতিকার সন্ধান দিয়েছেন। আলােচনার জন্য কোথাও কোথাও ওইসব গীতিকার অংশবিশেষের উদ্ধৃতিও দিয়েছেন।

দীনেশচন্দ্র বিষয়টা নিয়ে শিক্ষিতজনের সঙ্গে আলােচনা করলেন। বেশিরভাগ লােক এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। কেউ কেউ বললেন যে, তারা খুব ছেলেবেলায় গ্রামের ছােটোলােকদের মধ্যে অমন গান-টানের চল দেখেছেন। দেখেছেন লাঙলে ভর দিয়ে শত শত কৃষক তা উপভােগও করে। তবে তা নিম্নরুচির! তারা ওসব নিয়ে দীনেশচন্দ্রকে চিন্তিত হতে নিষেধ করলেন।

দীনেশচন্দ্র কিন্তু এই চিন্তা ছাড়লেন না। বরং তিনি ওই পত্রিকার সম্পাদক কেদারনাথ মজুমদারকে লেখক চন্দ্রকুমার দে সম্পর্কে জানাতে বললেন এবং তাঁকে কলকাতায় পাঠাতে বললেন। কেদারনাথ চন্দ্রকুমার সম্পর্কে যে-সংবাদ জানালেন, তা এই যে, ময়মনসিংহের কেন্দুয়া ডাকঘরের এলাকার আইথন নামে এক গ্রামে ১৮৮৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার জন্ম হয়। বাবার নাম রামকুমার। তার বাবা-মা অল্পবয়সে মারা যান। ফলে তার লেখাপড়া হয় গ্রামের পাঠশালা পর্যন্ত। ভাবুক প্রকৃতির এই ছেলেটার যে ক-বিঘে জমি ছিল, লােভী জমিদার তাও ছিনিয়ে নিয়ে তাকে নিঃস্ব করে দিল। বালক কাজ নিল এক মুদিখানায়। মাসিক বেতন এক টাকা। কিন্তু যেছেলে অবকাশ পেলে বই পড়ে, নিজে লিখতে চেষ্টা করে তাকে দোকানদারের পছন্দ হবে কেন! অতএব চাকরি গেল চন্দ্রকুমারের। 

কিছুদিন স্রোতের শ্যাওলার | মতাে ঘুরে সে পেল গ্রামের তহশিলদারি। গ্রামে গ্রামে ঘােরা হল তার চাকরির অঙ্গ। এই সূত্রেই সে সন্ধান পেল ওই অমূল্য ধনের। মালীর যােগান’-এ তারই খানিক স্বাদ পেয়েছেন দীনেশচন্দ্র।

কিন্তু কলকাতায় পাঠানাের উপায় নেই। চন্দ্রকুমার তখন উন্মাদ হয়ে গেছেন। দীনেশচন্দ্র হতাশ হলেও হাল ছাড়লেন না। চন্দ্রকুমার একটু সুস্থ হতেই তাকে আনা হল কলকাতায়। নিয়মিত চিকিৎসার আয়ােজন হল। চন্দ্রকুমার স্বাভাবিক হলেন। এতদিনে তার সংগ্রহ পড়ে ফেলেছেন দীনেশচন্দ্র। পড়ে ফেলেছেন স্যার আশুতােষ মুখােপাধ্যায়। ওঁরা চন্দ্রকুমারকে মাসিক বৃত্তিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রাহক পদে নিযুক্ত করলেন। চন্দ্রকুমারের প্রথম ঝোক ছিল শিষ্টসাহিত্যের পুথি সংগ্রহের দিকে। কারণ কাজটা অপেক্ষাকৃত সহজ। কিন্তু দীনেশচন্দ্র নাছােড়বান্দা। তার নিয়মিত উৎসাহে চন্দ্রকুমার নেমে পড়লেন অসাধ্য সাধনে। এসব পালা সংগ্রহ সহজ নয়। লেখা পুথি পাওয়া যায় না। পালাগুলাে বেঁচে আছে বহুজনের স্মৃতিতে। সকলে সবটাও জানেন না। কে কোনটুকু জানেন, তারও হদিস খুঁজে বের করতে হয়। চন্দ্রকুমারের কালে নাকি ব্যাপারটা ছিল আরও কঠিন।

যা হােক, চন্দ্রকুমারের নিদারুণ শ্রমে ও ত্যাগে সংগ্রহ হয় ময়মনসিংহ গীতিকার সবকটি পালা। ওগুলি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিতও হয় দীনেশচন্দ্রের সম্পাদনায়।


শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২২

বাংলার মাকড়সা - গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য

আমাদের বাংলাদেশে এক ইঞ্চির প্রায় পঁচিশ ভাগের এক ভাগ থেকে চার-পাঁচ ইঞ্চি পর্যন্ত বিভিন্ন আকারের অসংখ্য রকমারি মাকড়সা দেখতে পাওয়া যায়।  আমরা অনেকেই জাল-বােনা মাকড়সার সঙ্গে বিশেষভাবে পরিচিত। কিন্তু সব রকমের মাকড়সাই জাল বােনে না। যারা জাল বােনে একমাত্র তাদের রকমারি অবাক করার মতো। কেউ জাল বােনে খাড়াভাবে, কেউ বােনে শয়ানভাবে। কারাে জাল তেকোনা, কারাে জাল বহুকোণী । কারাে জাল তাবুর মতাে, আবার কারাে জাল পাতলা কাগজের মতাে সমতল। বিভিন্ন জাতের মাকড়সার জাল বােনার কৌশল এবং কারুকার্যও বিচিত্র রকমের। 


শ্ৰীযুক্ত গােপালচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য কেবলমাত্র যে কৃতী বৈজ্ঞানিক তা নন, বাংলাদেশের বিজ্ঞান সাহিত্যের ক্ষেত্রে তিনি একজন সুপরিচিত লেখক।

শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২২

অন্তরঙ্গ চারু মজুমদার: অমিত রায় (সংকলক)

ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম প্রধান চরিত্র চারু মজুমদার। চারু বাবু নকশাল আন্দোলনের পুরোধা পুরুষ ছিলেন। সি পি আই এম এল পার্টি গঠনের মাত্র তিন বছরের মধ্যে তাঁর নাম জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। চারু মজুমদার যখন ধরা পড়েন তখন তার বয়স চুয়ান্ন বছর। দেশে তার মাথার দাম ধার্য হয়েছিল সেই আমলের ১০ হাজার টাকা। ধরা পড়ার মাত্র ১১ দিনের মাথায় পুলিশ হেড কোয়ার্টারের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যু আজও রহস্যাবৃত। চারু বাবুর পথ ভুল না ঠিক তা নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে, হবেও কিন্তু তিনি এমন এক মানুষ যাকে কোনোদিনই উপেক্ষা করা যায় না।

এই বইটি লিখিত হয়েছে চারু মজুমদারের সান্নিধ্যে আসা নানা মানুষের স্মৃতিকথার ভিত্তিতে।


শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২২

জীবন-রাগ: তারাপদ সাঁতরা

পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক সংবাদপত্র জনপদবার্তায় এই স্মৃতিকথা প্রথম প্রকাশিত হয়। মােট ২৬ কিস্তিতে প্রকাশিত এর প্রথম লেখাটি মুদ্রিত হয় ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০১-এ। পত্রিকার পক্ষে শ্যামল বেরা ও তাপসকান্তি রাজপণ্ডিত ছিলেন এর মূল পরিকল্পক, ১৫ দিন পর-পর তারাপদ সাঁতরার নবাসন বাড়ি থেকে তাঁরাই গিয়ে লেখা নিয়ে আসতেন। এমনকী কিডনির অসুখে তারাপদ সাঁতরা যখন কলকাতার শেঠ সুখলাল কারনানি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, তখনও সেখান থেকে তাঁরা লেখা নিয়ে এসেছেন এবং তা ছাপাও হয়েছে। কিন্তু পত্রিকাটি অনিয়মিত হওয়ায় এক বছরের লেখা বেরয় প্রায় দেড় বছর জুড়ে। এ সমস্ত কিছুরই উল্লেখ লেখার মধ্যে আছে। তারপর পত্রিকাটি বন্ধই হয়ে যায়, ফলে লেখাও বন্ধ। ধরে নেওয়া যায়, এ লেখা আরও অনেক | কিস্তি চলত, অন্তত যত দিন তারাপদ বাবু বেঁচেছিলেন। এ স্মৃতিকথা তাই অসমাপ্তই থেকে গেছে।

প্রকাশের সময় খণ্ডাকারে প্রকাশিত এ লেখার মূল শিরােনাম ছিল ‘জীবনবীণার রাগরাগিনী’,বই হিসেবে প্রকাশের সময়ে তা ঈষৎ সংক্ষেপ করা হয়েছে। জীবনপঞ্জি ও গ্রন্থপঞ্জি তৈরিতে প্রকাশিত তথ্যের অনুসরণ করেছিল। বিশেষ করে উল্লেখ্য, বনানী-র তারাপদ সাঁতরা স্মরণ সংখ্যার (২০০৩) কথা।