শিল্প ও সাহিত্য লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
শিল্প ও সাহিত্য লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

বাংলা মৌখিক সাহিত্যের রূপান্তর - বন্দনা ভট্টাচার্য্য

একটি দেশের সাহিত্যকে সাধারণভাবে দুটি ভাগে ভাগ দরা যায়—মৌখিক সাহিত্য ও লিখিত সাহিত্য। আবার এই সাহিত্য যে সমাজের সৃষ্টি সেই সমাজ ও সেই সময়কার বিশেষ বিশেষ ঘটনা নিয়েই তৈরি হয় সাহিত্য। সুতরাং অগ্রগতির দিক দিয়ে বিচার করলে দেখা যাবে, যে কোনও দেশের মৌখিক সাহিত্য সেই দেশের লিখিত সাহিত্যের তুলনায় প্রাচীনতর। মানুষ যখন এক-একটি গোষ্ঠীবদ্ধ অবস্থায় বাস করত তখনই প্রতিটি সম্প্রদায়ের মৌখিক সাহিত্যের উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে। এই সাহিত্য বিশেষভাবে নিরক্ষর শ্রেণীহীন সম্প্রদায়ের সামগ্রিক ফসল, কোনও বিশেষ সম্প্রদায় ও ব্যক্তিবিশেষের সৃষ্টি নয় বলেই মনে হয়।

বাংলাদেশের শিক্ষিত সমাজের মধ্যে লিখিত সাহিত্য হাজার বছর ধরে চলে আসছে সত্য কিন্তু অলিখিত সাহিত্যের সমৃদ্ধি ও গতি তারই পাশাপাশি অব্যাহত থেকে গেছে। প্রকৃতপক্ষে অলিখিত সাহিত্য প্রথমে লিখিত সাহিত্যকে ভাব ও প্রেরণা জুগিয়েছে ; কিন্তু নিজের সজীবতা ও প্রাণশক্তিকে কখনওই হারিয়ে ফেলেনি। অলিখিত সাহিত্যের এই আশ্চর্য প্রাণশক্তির মূল কারণ সম্ভবত এই সাহিত্যের নিয়ত পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত অবস্থা। কোনও বিশেষ ভাবধারা বা চিন্তাধারাকে মেনে নিয়ে এর গতি থেমে থাকেনি। তাই দেখা যায় প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্য অনেকাংশেই প্রচলিত সাহিত্য থেকে প্রেরণা লাভ করেছে। আসলে আমাদের দেশের এক বিরাট অংশের জনগণ অশিক্ষিত থাকায় অলিখিত সাহিত্য তাদের মনের খোরাক জুগিয়েছে। বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বাংলার সমাজ-জীবনে যে বিরাট পরিবর্তন ঘটে তাতে পুরোনো যা কিছু তাকে বিসর্জন দিয়ে নতুনকে গ্রহণ করার একটা প্রবণতা দেখা যায়। ফলে প্রাচীন ভাবধারা ও তার বৈচিত্র্য এক বিরাট ভাঙনের মুখে এসে দাঁড়ায়। এই অবস্থায় অলিখিত সাহিত্য সাধারণভাবেই একটা বিপর্যয়ের সামনে উপস্থিত হয়। যদিও তার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও ঐতি আজও বর্তমান।


রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৪

মুর্শিদাবাদের কারুশিল্প - সুশান্ত বিশ্বাস

কারুশিল্পী বাংলার চিরায়ত লোকশিল্পকলার একটি আঙ্গিক-শৈলী। কারুশিল্প আজ গ্রামজীবনে হাজার হাজার মানুষের জীবন ধারণের অপরিহার্য মাধ্যম। এই যন্ত্র সভ্যতার যুগে মানুষ যেখানে তার সৃজনশীল শিল্প-কর্মের কথা ভুলে যাচ্ছে, সেখানে প্রত্যন্ত গ্রামে বসে জীবন ধারণের তাগিদে কারুশিল্পীরা প্রবহমান ধারায় তাদের শিল্পকর্মে নিযুক্ত আছেন, শিল্পী সমাজের খুব নিম্নস্তরের ধুলোমাখা শিল্পসত্ত্বার যে মানুষ, তাদের অন্তর্বেদনার কথা কতটুকু জানি আমরা। লেখক নিজে একজন কারুশিল্পী, ব্যক্তিগত জীবনে সেই শিল্পচর্চা থেকেই কারুশিল্পের প্রতি তাঁর ভাললাগা ও ভালবাসা। আর সেই ভালবাসাই মুর্শিদাবাদের কারুশিল্প নিয়ে কাজ করবার ইচ্ছাকে উসকে দিয়েছে। এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত থাকার সুবাদে জেলা ও রাজ্যের নানা প্রান্তের বিভিন্ন মাধ্যমের কারুশিল্পীদের সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগ হয়েছে, জানা হয়েছে এই শিল্পের নানা সমস্যা সম্পর্কে। এই বই সেই যাপন ও  চর্চারই ফসল। 


রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৩

বঙ্গ মিথিলার বিভূতিভূষণ - মঞ্জুলী ঘোষ

 বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের সাহিত্যিক প্রতিভা ও সাহিত্যচিন্তা বুদ্ধিবাদী মনন-শাণিত বিশ্লেষণী দৃষ্টিকোণ থেকে আজ অবধি স্বল্প আলোচিত। কারণ হিসেবে সর্বাগ্রে নির্দিষ্ট হয় হাস্যরসস্রস্টা রূপে তাঁর দৃঢ় একটানা পরিচিতি। এই পরিচিতিই নাকি তাঁর সাহিত্য প্রতিভার অনুপুঙ্খ আলোচনায় প্রতিবন্ধ এনেছে। অন্য কারণটি বলতে চায়, যথেষ্ট আধুনিক মনস্কতায় এই সাহিত্যিক প্রতিভাখানি উত্তরিত নয়।

এই পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গ মিথিলার বিভূতি-প্রতিভার সম্পূর্ণ আলোচিত কয়েকটি প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখার সংকল্পই এই রচনাগুলি ( বিভিন্ন সময়ে লেখা ) সংকলনের প্রেরণা ।

রাজশেখর বসু বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের রচনা মানবীয় করুণা ধারার ক্ষীর-নিষিক্ত বলে মনে করেছেন। —“ইংরেজিতে একটি কথা আছে, 'milk of human kindness'। - বিভূতিভূষণের লেখনীতে সেই কারণ্যের ক্ষীরধারা প্রচুর পরিমাণে আছে।” লিখেছিলেন তিনি, 'কথা সাহিত্য' বিভতিভূষণ মুখোপাধ্যায় ক্রোড়পত্রে।

এই করুণা ক্ষীরধারাকেই বিভূতিভষণের রচনা সংসারে নিরন্তর বইতে দেখা গেছে। তাঁর প্রসঙ্গে একটি সন্দেহাতীত ভাবে উচ্চারিত কথা এই যে, তিনি ভাবরস সংগ্রহ করেছেন নিতান্ত চেনা পরিচিত দুনিয়া এবং প্রাত্যহিকতাময় জীবন থেকে। আর সেই দানিয়া, সেই জীবনের প্রতি মেলে রয়েছেন যেন এক স্নেহসিক্ত, ক্ষমাস্নিগ্ধ, করুণা সিঞ্চিত দৃষ্টি যা প্রায়ই অমলিন কৌতুক হাসিতে উজ্জ্বল। এই করুণা কোমল সহাস উজ্জ্বলতাই তাঁর প্রতিভার মৌলিক বিশিষ্টতা বলে গৃহীত হয়েছে । তবে কৌতুক উজ্জ্বল করুণা স্নিগ্ধতা তরলতাকে ডেকে আনেনি কোথাও তাঁর রচনা সংসারে; যদিও সেই দুর্যোগসম্ভাবনা ছিল।


শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩

রবিতীর্থে বিদেশী - প্রবীরকুমার দেবনাথ

গবেষক-লেখক প্রবীরকুমার দেবনাথ বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত চিঠিপত্র ছাড়াও দেশ-বিদেশের দুর্লভ পত্র-পত্রিকা থেকে উপাদান সংগ্রহ করে শান্তিনিকেতনে আগত (১৯০১-১৯৪১) বিদেশীদের প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন এই গ্রন্থে। বলাবাহুল্য, রবীন্দ্রচর্চায় অপরিহার্য এই গ্রন্থ থেকে পাওয়া যাবে রবীন্দ্রজীবনের বহু মূল্যবান নূতন তথ্য।

রবীন্দ্রনাথ বিশ্বপথিক। দেশে দেশে ভ্রমণ করে বহু বিদেশীর সান্নিধ্যে এসে তিনি ‘দূর’কে ‘নিকট’ করেছেন—আহ্বান করেছেন বিশ্বের মানুষকে বিশ্ববিদ্যাতীর্থপ্রাঙ্গণ শান্তিনিকেতন-বিশ্বভারতীতে। স্বভাবতই রবিতীর্থ শান্তিনিকেতনে আগমন ঘটে বহু বিদেশীর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে। জাপানের হোরিসান, কাসাহারা, হাসেগাওয়া, সানোসান, তাকাগাকি, সুশো ব্যোদো, নোগুচি, ইংলন্ডের পিয়ার্সন, এন্ডরুজ, আমেরিকার এলমহার্স্ট, গ্রেচেন গ্রীন, হ্যারি টিম্বার্স, ফ্রান্সের সিলভা লেভি, আঁদ্রে কার্পেলে, চেকোশ্লোভাকিয়ার উইন্টারনিজ্, লেসনী, প্যালেস্টাইনের স্লোমিত্ ফ্লাউম, চীনের তান য়ুন-শান, সু-সী-মো, ইতালির ফর্মিকি, তুচ্চি, জারমেনির আনা জেলিক, হাইনস্ মোদে, সুইডেনের সেডারব্লম, জিয়ানসন, নরওয়ের স্টেন কোনো প্রমুখ শতাধিক বিদেশী রবীন্দ্রনাথের জীবনকালে শান্তিনিকেতনে এসেছিলেন—একাত্ম হয়ে যোগ দিয়েছিলেন এখানকার কর্মধারায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক বা কর্মীরূপে। তাঁরা অনেকেই মনে করতেন 'Santiniketan is almost the world in miniature'!


শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩

বাংলা লেখার সহজপাঠ - পবিত্র সরকার

বাংলা প্রকাশনার জগৎে সাড়া জাগিয়ে এসেছিল সৃষ্টি প্রকাশন। যে অল্প সময় এই সংস্থার আয়ু ছিল তার মধ্যেই বেশ কিছু মননশীল বই এঁরা পাঠকদের উপহার দেন। এই বইটি তেমনই একটি বই।  এই বই যদিও আগ্রহী ছাত্র ও শিক্ষকদের ভালো বাংলা লেখা শেখার উদ্দেশ্যে প্রণীত।  কিন্তু ছাত্র তো আমরা সকলেই।  মাতৃভাষার মণিমুক্তো সমুদ্রের কতটুকু আয়ত্তে এসেছে যে আর চাইনা বলতে পারি?

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের কলমের গুনে এই বই যথেষ্ট সহজ সরল হয়ে উঠেছে।  বইটি আশাকরি সবার ভালো লাগবে। 

শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০২৩

তুলসী লাহিড়ী - বিজিতকুমার দত্ত

নাটক ও চলচ্চিত্র জগতের যশস্বী ব্যক্তিত্ব তুলসী লাহিড়ীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশের কথা ছিল। বাংলা সাহিত্যের আর একজন গুণী মানুষ প্রয়াত বিজিতকুমার দত্ত অসুস্থ শরীরেও গ্রন্থটি লেখার কাজ শেষ করেছিলেন।

কিছু কিছু অভিধা বহু ব্যবহারে তার মূল দ্যোতনা হারায়। ‘বহুমুখী প্রতিভা' এমনই একটা জৌলুস হারানো বিশেষণ। অপাত্রে অপ্রয়োজনে ব্যবহৃত হতে হতে ক্রমশ ম্রিয়মান এই শব্দবন্ধ প্রকৃত অর্থে যাঁদের নামের আগে প্রযুক্ত হতে পারে তেমনই একজন তুলসী লাহিড়ী। সুরকার - গীতিকার-পরিচালক-নাট্যকার-অভিনেতা তুলসী লাহিড়ী।

শৈশব থেকেই সংগীতের প্রতি তুলসী লাহিড়ীর ঝোঁক ছিল। এর পিছনে মূল প্রেরণা ছিলেন পিতা সুরেন্দ্রচন্দ্র (মতান্তরে, সুরেন্দ্রনাথ)। মঞ্চের সঙ্গে তুলসী লাহিড়ীর প্রথম যোগাযোগের সূত্রও এই সংগীত। ১৯২৮-৩৪ সালের মধ্যে তিনি গ্রামোফোন কোম্পানির জন্য অজস্র গান লেখেন ও সুর দেন। মোটামুটি হিসাবে তুলসীবাবুর প্রায় ২০০টি গান ওই কোম্পানি রেকর্ড করে। তিনি বাংলা খেয়াল, ঠুংরি, পল্লিগীতি, বিজয়া-আগমনী, ভক্তিমূলক গান, কৌতুকগীতি ইত্যাদি লিখেছেন ও সুরারোপ করেছেন। মূলত রাগাশ্রয়ী গানের প্রতি তাঁর টান ছিল। জমিরুদ্দিন খাঁ-র মতো সে সময়ের বিখ্যাত ওস্তাদ গাইয়ে ও বড়ো বড়ো সংগীতবিদ্রা তুলসীবাবুর গুণগ্রাহী ছিলেন ও তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন।

তুলসী লাহিড়ী নাটকের জগতে পাকাপাকিভাবে আসেন ১৯৪০-৪১ সালে। মন্বন্তর আর দেশভাগের বেদনাবহ স্মৃতি তুলসী লাহিড়ীর রচনায় বারবার ঘুরেফিরে এসেছে। মনুষ্যত্বের অমর্যাদা তাঁকে পীড়িত করেছে। তাঁর অধিকাংশ নাটকের নাটকের মেরুদণ্ডই  হচ্ছে  --- জীবনযুদ্ধই বেঁচে থাকার ধর্ম। 

শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩

প্রসঙ্গ সত্যজিৎ - অমিয় সান্যাল

বইটি থেকে সত্যজিৎ রায় সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানা যায়।  লেখক বহুদিন সত্যজিৎ রায়ের সান্নিধ্যে কাটিয়েছিলেন। এই বইতে সত্যজিতের সঙ্গে কাটানো নানা মুহূর্তের স্মৃতিচারণ রয়েছে।  সত্যজিৎ রায় একজন বহুমুখী ব্যক্তিত্ব।  বিভিন্ন আঙ্গিক থেকে তাঁকে বোঝার চেষ্টা বাঙালি আজও করে চলেছে। এই বইটি যে সেই প্রচেষ্টার পালে হাওয়া হালে পানি দেবে তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। 


রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২২

কবিশেখর সমীপেষু : কবিশেখর কালিদাস রায়কে লেখা পত্রগুচ্ছ : সংকলন ও সম্পাদনা : কবিরঞ্জন রায় ও কবিকঙ্কন রায়

কবিশেখর কালিদাস রায় বাঙালি পাঠকের কাছে একটি অত্যন্ত পরিচিত নাম। বাংলা সাহিত্য গগনে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র বলা যায়। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, ছান্দসিক, বৈয়াকরণ, সাহিত্য সমালােচক, শিক্ষাব্রতী ও ভাষাতত্ত্ববিদ। কিন্তু তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক। শিক্ষা জগতে তার নবচিন্তন শিক্ষাব্রতেরই অনুসরণ করছেন পরবর্তী শিক্ষক সমাজ। উত্তর জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত বহু কৃতী ছাত্রের তিনি ছিলেন শিক্ষাগুরু। এই ছাত্র দরদী কবির অমর কবিতা ছাত্রধারা বাংলা দেশের এমন কোন শিক্ষার্থী নেই, যাঁরা পড়েন নি।

কবিশেখরের সাহিত্য সাধনার স্বীকৃতি স্বরূপ বিশ্বভারতী তাঁদের সর্বোচ্চ ‘দেশিকোত্তম’ উপাধি দানে সম্মানিত করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্য ও কাব্যে শ্রেষ্ঠ কীর্তির জন্য জগত্তারিণী স্বর্ণপদক ও বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে গবেষণার জন্য সরােজিনী স্বর্ণপদক দিয়ে সম্মানিত করেন। রবীন্দ্রভারতী ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি দেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার পূর্ণাহুতি কাব্যগ্রন্থের জন্য তাকে রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান করেন।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে তাঁর সাহিত্য যাত্রা শুরু হয়। তারপর ৭০ বছর ধরে অক্লান্ত সাহিত্য সাধনা করে গেছেন। এই ৭০ বছরের সাহিত্য জীবনে তিনি অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেন। তার মধ্যে কাব্য, অনুবাদ কাব্য, সমালােচনা সাহিত্য, রম্য রচনা, কিশোর বা শিশুসাহিত্য, ব্যাকরণ, ভাষাতত্ত্ব, ছন্দ, অলংকার, বাংলা অভিধান উল্লেখযোগ্য। এই ৭০ বছরের সাহিত্য জীবনে তিনি কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, ঐতিহাসিক, বিজ্ঞানী, সঙ্গীতশিল্পী প্রমুখ অসংখ্য মনীষীর সংস্পর্শে আসেন। কবিশেখরের সঙ্গে চিঠিপত্রের মাধ্যমে তাঁদের নিয়মিত ভাবের আদানপ্রদান হতো।

পত্রকারদের মধ্যে বিশিষ্ট কয়েকজন হলেন : কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সম্পাদক ও প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরী, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, সাংবাদিক ও সাহিত্যসেবী হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ, কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ভাষাবিদ ও অধ্যাপক বিধুশেখর শাস্ত্রী, পণ্ডিত ক্ষিতিমোহন সেন, রাজশেখর বসু, অমল হোম, অধ্যাপক চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, দিলীপকুমার রায়, অধ্যাপক সুশীলকুমার দে, ঐতিহাসিক ও চিন্তাবিদ রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায় ও রাধাকমল মুখোপাধ্যায়, সাহিত্য সমালোচক সুরেশচন্দ্র সমাজপতি, কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, বনফুল, বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি ও সমালোচক মোহিতলাল মজুমদার, পরিমল গােস্বামী, কবি করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক, কবি যতীন বাগচী, যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, জসীমউদ্দীন প্রমুখ আরাে অনেক গুণীজন।

 এই পত্রগুলিতে সেকালের সমাজ চিত্র, সংস্কৃতি, আচার বিচারের অনেক পরিচয় পাওয়া যাবে। ৭০ বছরের অনেক ইতিহাস, অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। সেকালের কবি-লেখকেরা কিরকম অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন তারও একটা পরিচয় এইসব পত্রে পাওয়া যায়। একে অপরের সঙ্গে শ্রদ্ধা-বন্ধুত্ব-স্নেহের বন্ধনে জড়িয়ে থাকতেন। পরস্পর পরস্পরের ছিদ্র খুঁজে বেড়াতেন না। ভালাে লেখার জন্য যেমন দরাজ হাতে প্রশংসা করতেন, তেমনি লেখা মনঃপুত না হলে সমালােচনা করতেও ছাড়তেন না—তা আবার জানিয়ে দিতেন পত্রের মাধ্যমে। কবিশেখর সম্বন্ধে আজও আমাদের অনেক তথ্য অজানা থেকে গেছে। এই পত্রগুলি পড়লে পাঠকেরা অনেক নতুন তথ্য জানতে পারবেন।



রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২

কলকাতা একাল ও সেকাল

কলকাতার বিখ্যাত স্থানগুলোর ঐতিহাসিক পরিচয়, পুরোনো ছবি আর রথীন মিত্রের অসাধারণ স্কেচ সমৃদ্ধ সংগ্রহযোগ্য কলকাতা বিষয়ক বাংলা বই।