ভাবতেও অবাক লাগে ১৯০৩ সাল পর্যন্ত বাঁকুড়ায় কোনো রেলপথ ছিল না। বাঁকুড়া যেতে হলে ই.আই.আর'এর ট্রেনে চেপে রানিগঞ্জে নামতে হত। ওখান থেকে বাঁকুড়া ত্রিশ মাইল। ভরসা ঘোড়ায় টানা টিক্কা গাড়ি। এই গাড়িতে চেপেই ওয়েসলিয়ন মিশনের পাদ্রীরা বাঁকুড়ায় পৌঁছতেন। আর এই অবস্থাতেই স্থাপিত হয় বাঁকুড়া ওয়েসলিয়ন মিশন কলেজ, পরে নাম বাঁকুড়া ক্রিশ্চান কলেজ।
বাঁকুড়ার নামকরণ কেমন করে হয়েছিল? মল্ল রাজবংশের শ্রেষ্ঠ নৃপতি বীর হাম্বীরের চারজন রানি এবং বাইশটি পুত্র। বীর হাম্বীর তাঁর রাজ্যকে বাইশটি তরফে ভাগ করেন। এর মধ্যে একটি পান তার তৃতীয় বা চতুর্থ পুত্র বীর বাঁকুড়া। রাজপুত্রের নামেই যে নগরীর নাম সেটাই অনেকে বিশ্বাস করে।
সেইকালের ঘটনাবলির মধ্যে পাবেন বর্গি বা মারাঠা দস্যুদের ১৭৪২ সাল থেকে ১৭৫১ সালের শেষ পর্যন্ত বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর এবং হুগলি নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে অকথ্য অত্যাচার। মল্লরাজ-বংশের তখন হাঁটু ভাঙা দ'য়ের অবস্থা। আর বর্ধমানরাজ কীর্তিচাঁদ তার অনেক অংশ দখল করে নিয়েছেন।
এরই মধ্যে পাবেন মল্লরাজাদের হাতে তৈরি মন্দিরময় বিষ্ণুপুর, নতুন বিষ্ণুপুর ঘরানার সুর ঝংকার, ভাস্কর পণ্ডিতকে গুপ্তহত্যা, বি.ডি.আর ট্রেনের অবলুপ্তি, অসম্পূর্ণ মারাঠা ডিচ্ এবং সেদিনের শ্বাপদ সংকুল জঙ্গলময় বাঁকুড়ার এক আলোকোজ্জ্বল নগরীতে উত্তরণ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন