রবিবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৩

সে আর এক কলকাতা - ডঃ অতুল সুর

‘সে আর এক কলকাতা'র লোক একবার জুয়ায় ডুবে গিয়েছিল। সময়টা প্রথম মহাযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) দু-তিন বছর আগের কথা। জুয়াটার নাম “তুলার খেলা'।  সব দোকানের সামনে ঝুলছে একখানা সাইনবোর্ড — মাপে এক হাত চওড়া ও দু হাত খাড়াই। বোর্ডটির মাথায় লেখা 'আমেরিকান কটন ফিগার'। আর তার নিচে দশটা লাইন, প্রত্যেক লাইনের গোড়ায় লেখা আছে যথাক্রমে ওয়ান, টু, থ্রি ইত্যাদি -এক থেকে দশ পর্যন্ত সংখ্যা।

আজ যদি কেউ কোন সংখ্যায় এক আনা পয়সা লাগায় আর সামনে কাল যদি সেই সংখ্যা ওঠে, তা হলে সে কাল আট আনা পয়সা পেত। পয়সা লাগাবার সময় ওরা একটা রসিদ দিত, আর কাল ওই রসিদটা দেখালেই ওরা আট আনা পয়সা দিয়ে দিত।

রাতারাতি কলকাতা শহরে গজিয়ে উঠেছিল হাজার হাজার ‘তুলোর খেলার দোকান। খেলাটা শহরের লোককে এমনভাবে আকৃষ্ট করল যে সারা শহরে জুয়ার বন্যা বয়ে গেল। সে এক অদ্ভুত দৃশ্য। বাড়ির কর্তা খেলেন, গিন্নী খেলেন। বৌ খেলে, মেয়ে খেলে। ছেলে খেলে, জামাই খেলে। রাঁধুনী বামুন খেলে, ঝি-চাকর খেলে। মুটে খেলে, মজুর খেলে। দোকানদার খেলে, ব্যবসাপতি খেলে। এককথায় শহরের সকল শ্রেণী, সম্প্রদায় ও স্তরের লোকই ‘তুলোর খেলায় মত্ত হয়ে উঠল। এমন কী স্কুলের ছেলেরাও মারবেল গুলি নিয়ে ওই খেলা খেলতে শুরু করে দিল।

তুলোর খেলায় যে নম্বরটা উঠত, সেটা আমেরিকার নিউ আরলীস শহরের তুলোর ফাটকা-বাজারের দরের ভিত্তিতে নির্ধারিত হত। তুলোর খেলার যে বোর্ডগুলো দোকানের সামনে টাঙানো থাকত, তাতে এক থেকে দশ নম্বর ছাড়া আরো দু-তিনটি বহু-অঙ্ক-বিশিষ্ট সংখ্যা থাকত। সকলেরই ধান্ধা ছিল ওই সংখ্যাগুলি থেকে পরদিনের নম্বর আবিষ্কার করা।




গবেষক , ঐতিহাসিক ডঃ অতুল সুরের লেখা এই বইটি কলকাতার প্রামাণ্য ইতিহাস নয় তবে স্মৃতিকথার মধ্যে দিয়ে পুরোনো কলকাতার নানা আকর্ষণীয় ছবি ফুটে ওঠে এই বইতে। লেখকের কথা অনুযায়ী এই বইতে কলকাতা নিয়ে তিনি যা বলেছেন তা তাঁর লেখা কলকাতা বিষয়ক অন্যান্য গ্রন্থ্যে বলা হয়নি। 

৬৯ পাতা 
ফাইল সাইজ: ৫.৪ এম বি 
হার্ড কপি, স্ক্যান, এডিট: DSR 

:: ডাউনলোড করুন ::


বইটির প্রকাশক 
 সাহিত্যলোক 
৩২/৭ বিডন স্ট্রিট , কলকাতা ৬

প্রথম সংস্করণ : প্রকাশকাল ১৯৯৭

বইটি বর্তমানে আউট অফ প্রিন্ট। অন্তত এই প্রকাশক আর প্রকাশ করেননা বলেই সোনা যায়।  নতুন করে প্রকাশিত না হলে ভরসা কেবল পুরোনো বইয়ের দোকান। 
তবে আমি আশ্চর্যজনক ভাবে গিরিশ পার্কের কাছে ডি এম লাইব্রেরির আউটলেটে একটি পুরোনো সংস্করণ পেয়ে গিয়েছিলাম।  হলদে হয়ে যাওয়া বিবর্ণ মুচমুচে পিতা নড়াচড়া করলেই ভেঙে যাচ্ছে।  দাম যদিও খুবই কম ছিল।  মাত্র ২৫ টাকা।  তাই বইটা জোগাড় করতে চাইলে একবার ডি এম লাইব্রেরি ঘুরে আসতে পারেন। 



পি.ডি.এফ কখনোই একটি বইয়ের হার্ডকপির সমতুল্য হতে পারেনা। তাই সুযোগ থাকলে অবশ্যই বইটির হার্ডকপি কিনে পড়ুন। আলীসাহেব বলে গেছেন - বই কিনে কেউ কখনো দেউলিয়া হয়না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন